প্রশ্নঃ ইসলামী পরিবার কাকে বলে?ইসলামিক পরিবারে নারীর অধিকার কি?




উত্তরঃ 

পরিবারের পরিচয়ঃজন্মগতভাবে মানুষ পরিবারের আওতাভুক্ত ।পিতা-মাতা ,ভাই-বোন ,স্বামী-স্ত্রী্‌,পুত্রকন্যা সহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন একত্রে বসবাস করাকে পরিবার বলা হয় । আর যে পরিবারের সব সদস্য ইসলামী আদর্শ অনুযায়ী জীবন-যাপন করে থাকে,সে পরিবারকে ইসলামী পরিবার বলা হয়। ইসলামী পরিবার পরিচয় প্রদানের মুসলিম মনীষীদের সংজ্ঞাগুলো  তুলে ধরা হলো।


** শাহ মোঃ আব্দুর রহিম এর মতে, যে পরিবার ইসলামী ভাবধারা ইসলামী নীতিমালা ও ইসলামী বিধি-বিধানের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে এবং পরিচালিত হয় তাকে ইসলামী পরিবার বলে।

** মাওলানা আব্দুর রহিমের মত ,স্বামী স্ত্র্‌ সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা, ভাই বোন প্রবৃত্তি একান্ন ভুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে পরিবার আর বৃহৎ বৃহদায়তন পরিবার কিংবা বহুসংখ্যক পরিবারের সমন্বিত রূপ হচ্ছে সমাজ

** আল্লামা জামাল আল বাদাবির মতে, সমগ্র মানবজাতি মুসলিম পরিবারের অন্তর্ভুক্ত তদুপরি পরিবার বলতে বিবাহিত ও রক্তের সম্পর্কে আবদ্ধ দেরকে বোঝানো হয়েছে ,সর্বোপরি বলা যায় যে, পরিবার হচ্ছে এমন একটি ক্ষুদ্র সামাজিক সংগঠন যেখানে নারী পুরুষ সমাজস্বীকৃত ভাবে একত্রে বসবাস করে ।যেখানে বৈবাহিক ও রক্ত সম্পর্ক সূত্রে স্বামী-স্ত্রী তাদের সন্তান সন্ততি এবং কোন ক্ষেত্রে সন্তানাদি স্ত্রী পরিজন নিয়ে বসবাস করে।



ইসলামী পরিবারে নারীর অধিকারঃ

ইসলাম নারীকে  বহুবিধ সংকটাপন্ন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিয়ে সুউচ্চ মর্যাদার আসনে সমাসীন করেছেন এবং ঘোষণা করেছে,মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে সূরা নিসায় ঘোষণা করেন, 


 হে মানবজাতি তোমরা ভয় কর তাকে যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন একটিমাত্র প্রান থেকে আর সেই একই প্রান থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া আর তারপর তাদের দুজনের মাধ্যমে সমগ্র দুনিয়াতে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী ।এ ঘোষণায় প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় নারী-পুরুষের যে ব্যবধান ছিল তা ভেঙে চুরে বিলীন করে দেওয়া হয়েছে এবং ঘোষণা করা হয়েছে।মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা বাকারার  ২২৮ নং আয়াতে বলেনঃ


 ইসলামে পুরুষের যেমন স্ত্রীদের ওপর অধিকার রয়েছে তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে স্বামীদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। ইসলাম নারীকে যেসকল মর্যাদা ও অধিকার সংরক্ষণ করেছে কোরআন ও হাদিসের আলোকে তা নিম্নে আলোচনা করা হল।



১. ভরণপােষণ প্রাপ্তির অধিকারঃ

 বিবাহিত নারীর মৌলিক অধিকারের মধ্যে ভাণপােষণ প্রাপ্তির অধিকারকে অগ্রগণ্য সাব্যস্ত করা হয়েছে। ভরণপােষণ বলতে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা ইত্যাদিকে বুঝানাে হয়েছে।


 এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে মোষণা করা হয়েছে "যথাযথভাবে মেয়ের খাদ্য ও ভরণপােষণের ব্যবস্থা করা পিতার জন্য অপরিহার্য। বিয়ের পরে দায়িত্ব স্বামীর। বিদায় হজ্জের ভাষণে রাসুল (স) নারীর এ অধিকার আদায় করার তাকিদ দিয়েছেন। যথাযথভাবে তাদের তাদের (নারীদের)পানাহার ও পােশাকের ব্যবস্থা করা তােমাদের উপর অপরিহার্য (বুখারী) সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি কোন স্বামী এ দায়িত্ব

পালন না করে তবে ইসলামি আইন তাকে এ দায়িত্ব পালনে বাধ্য করবে। স্বামী-স্ত্রীর ওনণপােষণে ব্যর্থ হলে স্ত্রী বাহবিচ্ছেদের দাবি করতে পারবে।


২. মােহরানা প্রাপ্তির অধিকারঃ

 বিয়ের সময় নারী-পুরুষের মাঝে মােহরানা সংক্রান্ত যে চুক্তি সম্পাদিত হয় তা পূরণ

করা পুরুষের জন্য ফরজ। তবে নারী যদি পুরুষকে এটি আদায়ে কোন প্রকার রেয়াত দেয় সেটি ভিন্ন কথা।

 মােহরানা আদায়ের ক্ষেত্রে আল্লাহর নির্দেশ এমন মহান আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসা ০৪আয়াতে বলেন, وَآتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً ۚ


* আর আনন্দের সাথে (ফরজ মনে করে)স্ত্রীদের মােহরানা আদায় করে দাও।”মহান আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার 24 নম্বর আয়াতে বলেন,

তাদের মধ্যে তোমরা যাদেরকে ভোগ করেছ তাদেরকে নির্ধারিত মোহর দিয়ে দাও। আর নির্ধারণের পর যে ব্যাপারে তোমরা পরস্পর সম্মত হবে তাতে তোমাদের উপর কোন অপরাধ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।।


৩, জ্ঞানার্জনের অধিকারঃ

                                        ইসলাম জ্ঞানার্জনের জন্য নারীকে শুধু অধিকারই দেয় নি, বরং তা ফরজ করে দিয়েছে।

এ একটা ক্ষেত্রে নারীকে পুরুষ থেকে আলাদা করে দেখা হয় নি। বলা হয়েছে*** :


“বলুন, যারা না আর যারা মুর্থ তারা কি সমান হতে পারে?

হাদিসে রাসূল (স) বলেছেন


মহানবী (স) মেয়েদেরকে লেখাপড়া ও শিষ্টাচার শেখানাের প্রতি উৎসাহিত করেছেন। হযরত আয়েশা (রা) থেকে

বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) বলেন কোন ব্যক্তি যদি কোন কন্যাসন্তানের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করে তাকে উত্তমভাবে।লালন পালন করে, তবে ঐ কন্যা সে ব্যক্তির জাহান্নামের পথে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াবে।

ইসলাম জ্ঞানার্জনের জন্য নারীদের যে অধিকার দিয়েছে এ অধিকারকে পুরােপুরি কাজে লাগিয়েছিলেন, রাসূল (স) এর মহিলা সাহাবিরা। তারা জ্ঞানার্জনের ভান বেশি বেশি রাসূলের খেদমতে হাজির হতেন। একবার জনৈক এক মহিলা

রাসূলের (স) কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আপনার হাদিস তাে, সব পুরুষরা নিয়ে গেল। সুতরাং আপনি

আমাদেরকে আল্লাহ প্রদত্ত ইলম শিক্ষা দানের জন্য একটা দিন নির্ধারণ করে নিন। যে দিন আমরা সবাই আপনার

খেদমতে হাফির হব। জবাবে রাসূল (স) বলেন, 'অমুক দিন অমুক স্থানে তােমরা সমবেত হবে।

(বুখারী)


রাসূল (স) বলেছেন, যে ব্যক্তির অথীনে কোন দাসী থাকে সে যদি তাকে উত্তমরূপে লেখাপড়া ও শিষ্টাচার শিখিয়ে স্বাধীন করে দেয় এবং বিয়ে করে, তবে সে ব্যক্তি দুটি প্রতিদান পাবে। (বুখারী) 


নারী যদি তার স্বামীর কাছে দ্বীনি শিক্ষার দাবি করে তাহলে স্বামী নিজের সরাসরি তার সে দাবি পূরণ করবে । তা না হলে তাকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করবে। প্রয়ােজনে নারী বিচারকের স্মরণাপন্ন হতে পারবে।ঙ্কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর অনুমতি নিতেও বাধ্য নয়। কোন মাসয়ালা জানার প্রয়ােজন হলে স্বামী যদি ফকীহ না হন তাহলে সেটা জানার জন্য। নারী স্বামীর অনুমতি ছাড়াই ইলমের মজলিশে যেতে পারত।


৪. উত্তরাধিকার প্রাপ্তির অধিকারঃ

                                                  ইসলাম ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সকল ধর্মই নারীর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির অধিকার অস্বীকার করেছে। সেক্ষেত্রে ইসলাম নারীর উত্তরাধিকার নিশ্চিত করে নারীকে সম্মানিত ও মহান, সামাজিক মর্যাদায়। প্রতিষ্ঠিত করেছে। কুরআনে ঘোষণা হয়েছে।মহান আল্লাহ তায়ালা সূরাটি ০৭ নম্বর আয়াতে বলেন 



পুরুষদের জন্য মাতা-পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ রয়েছে। আর নারীদের জন্য রয়েছে মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ- তা থেকে কম হোক বা বেশি হোক- নির্ধারিত হারে।



৫. স্বামীর ধনসম্পদের অধিকার : স্বামীর সম্পনে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে ইসলাম। হযরত আবু হুরায়রা (রা) বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে  স্ত্রী যদি স্বামীর উপার্জিত ধনসম্পদ থেকে তার আদেশ ব্যতীতই কিছু ব্যয় করে তবে তার স্বামীর অর্ধেক সওয়াব পাবে। 

(বুখারী ও মুসলিম)

হযরত আয়েশা (রা) বর্ণিত অপর একটি হাদিসে বলা হয়েছে, স্ত্রী যদি স্বামীর খাদিদ্রব্য থেকে শরিয়ত বিরােধী নয়। এমন কাজে এবং খারাপ নয় এমনভাবে ব্যয় করে তবে তার সওয়াব হবে। কেননা সে ব্যয় করেছে। অন্যদিকে, স্বামীরও সওয়াব হবে কেননা সে উপায়ান করেছে ।



৬. উত্তম ব্যবহার প্রাপ্তির অধিকার : পবিত্র কুরআনের শিক্ষা হলাে স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহার করা। এমনকি স্ত্রী যদি অপছন্দনীয় হয় তবুও যথাসাধ্য তার সাথে সদ্ভাব ও মিলেমিশে জীবনযাপন কর।

কোরআনে সম্পর্কে আহ্বান জানানো হয়েছে তাদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর ।তারা যদি তোমাদের পছন্দনীয় না হয় তাহলে এমনও হতে পারে যে তোমরা কোন বিষয়কে অপছন্দ করছ অথচ আল্লাহ তাআলা তাতে তোমাদের জন্য অফুরন্ত কল্যাণ রেখে দিয়েছে।

 রাসূল (স) বলেছেন, মুমিনের মধ্যে ঈমানের দিক থেকে পরিপূর্ণ সে ব্যক্তি যে তাদের মধ্যে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী। তােমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি তারা যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম।

স্ত্রীদের সাথে উত্তম ব্যবহার করা প্রত্যেক স্বামীর কর্তব্য। তবে স্ত্রী অন্যায় করলে তাকে শাসন করা যাবে না এমনটি নয়। তাকে পর্যায়ক্রমে সংশােধনের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। কুরআনে বলা হয়েছে। 


আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কাকরাে তাদেরকে সদুপদেশ দাও, (এতে যদি সংশােধিত না হয়) তাদের শয্যা ত্যাগ কর। (শেষ পর্যায়ে) মৃদু প্রহার কর। 'যদি তারা তাতে অনুগত হয়ে যায় তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করাে না। (সূরা নিসা, আয়াত : ৩৪)



৭. পছন্দমতাে জীবন সঙ্গী নির্বাচনের অধিকারী ঃ ইসলাম নারী-পুরুষ সবাইকে মতামতে স্বাধীনতা দিয়েছে। বিশেষ করে নারীকে তার জীবন সঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে । পুত্রের মতামতের শুরুত্বের চেয়ে নারীর মতামতের গুরুত্ব কোন অংশেই কম নয়। বিবাহে নারীর পছন্দ-অপহপ, ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে পূর্ণমাত্রায় স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন পুরুষের সাথে বিবাহ দেয়া ইসলামি শরিয়ত বৈধ স্বীকৃতি দেয় নি।

 রাসূলের যুগে খানসা বিনতে খিদামকে তার পিতা তার অসম্মতি সত্ত্বেও বিবাহ দিয়েছিলেন। রাসূল (স) সে বিবাহ বাতিল করে দিয়েছিলেন।(বুখারী) 


৮. বৈবাহিক সম্পর্ক ছেদ করার অধিকারঃ দাম্পত্য জ্বীবন মানুষের জীবনে সুখ, শান্তি, প্রেম ও ভালােবাসার এক বেহেস্তী সওগাত। কিন্তু কোন কারণে যদি এ ভালােবাসার ফাটল ধরে তবে ইসলামের বিধান হলাে যে কোনভাবে তা মীমাংসা করে ফেলা। সেক্ষেত্রেও মীমাংসা সম্ভব না হলে যে কোন পক্ষ ' বিবাহবিচ্ছেদ চাইতে পারবে। স্বামী যদি বিবাহ বিচ্ছেদ চায় তাহলে সে স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবে। আবার যদি স্ত্রী বিবাহবিচেছদ চায় তবে স্ত্রী স্বামীকে কিছু টাকা পয়সা বা ধনসম্পদ দিয়ে নিজেকে মুক্ত করে নিতে পারবে।

হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার ছাবিত ইবনে কায়েসের স্ত্রী মহানবী (স) এর কাছে এলে ছাতিকে তার দ্বীন নৈতিকতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক আখ্যায়িত করে তার থেকে মুক্তি কামনা করেন। মােহর হিসেবে প্রাপ্ত খেজুর বাগানটি ছাবিতকে ফিরিয়ে দিতে চান। তথন মহানবী (স) তাদের বিবাহবিচ্ছেদের নির্দেশ দেন। (বুখারী)



৯. জামাআতে নামাজ পড়ার অধিকারঃ

                                                             পুরুষের জন্য জামাআতে নামাজ পড়াকে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ ঘােষণা করেছে। ইসলামি শরিয়ত নারীকে একাকিত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাকে ঘরে নামাজ আদায় উত্তম বলেছে। কিন্তু মসজিদে জামাআতে নামাজ পড়া থেকে বঞ্চিত করে নি। শুধু উগ্র সাজসজ্জা ও সুগন্ধি লাগানাে থেকে বিরত থেকে মসজিদে গিয়ে মহিলাদের নামাজ পড়ার অধিকার দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহানবী (স) বলেন, তােমরা নারীদের মসজিদে যেতে বাধা দিও না, যদিও নামাজের জন্য তাদের ঘরই উত্তম। (বুখারী)


১০. জিহাদে অংশগ্রহণ করার অধিকারঃ

                                                           সাধারণ অবস্থায় জিহাদ ফরজে কেফায়া হলেও বিশেষ অবস্থায় জিহাদ ফরজে আইন। ইসলাম নারীকে জিহাদে অংশগ্রহণ করা থেকে অব্যাহতি দিলেও নারীর এ অধিকারকে ছিনিয়ে নেয় নি। মহানবী (স) এর যুগে বহু মহিলা সাহাবি জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন বলে প্রসিদ্ধ হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া যায়।

হযরত উম্মে আতিয়া আনছারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (স) এর সাথে সাতটি যুদ্ধে অংশ নিয়েছি। আমি পুরুষদের বাহনের পিছনে থাকতাম এবং তাদের জন্য খাদ্য প্রস্তুত করতাম আর

আহতদের ও রুগীদের সেবায় নিয়ােজিত থাকতাম।


১১, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার অধিকারঃ

                                                            সত্যের পক্ষে এবং অন্যায়ের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ তথা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার অধিকার ইসলাম নাৰ্মীকেও দিয়েছে। আল্লাহ বলেন,


 মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীগণ একে অপরের বন্ধুত ।তারা সৎকাজের আদেশ এবং অন্যায় কাজে বাধা প্রদান করবে।

(সূরা তওবা, আয়াত : ৭১)



১২, প্রয়ােজনে ঘরের বাইরে যাওয়ার অধিকাৰঃ

                                                                    ইসলামি শরিয়তের নীতিমালা অনুসরণ করে প্রয়ােজনে নারী তার ঘরের বাইরে যেতে পারে। রাসূল (স) এর যুগেও একালীন নারীরা এ অধিকার পুরােপুরি ভােগ করেছে এছাড়া ইসলাম নারীকে সুস্থ চিত্তবিনােদনের অনুমতি দিয়েছে। নিরুপায় অবস্থায় অর্থউপার্জনের করার অধিকারও দিয়েছে। এমনকি ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য বৈধ ও নিয়মতান্ত্রিক সংগঠন করার, মতামত প্রকাশ ও পরামর্শ করার অধিকার দিয়েছে।


 বর্তমান সমাজ সভ্যতায় নারীর অধিকার সংক্রান্ত বিচ্ছিন্ন ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান । অথচ ইসলামই নারীর উপযুক্ত অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠিত করেছে।


পরিশেষে বলা যায় যে  ইসলাম নারীকে পুরুষের সমান অধিকার না দিয়ে তাকে বঞ্চিত করেছে, যারা এ অভিযােগ উত্থাপন করে সেটা একেবারেই অযৌক্তিক ও অভজ্ঞতা প্রসূত। কারণ ইসলাম নারীকে তার জীবনের সকল অধ্যায় থেকে অর্থনৈতিক দায় দায়িত্ব থেকে মুক্ত করে দিয়েছে। বিবাহের পূর্বে পিতা, বিয়ের পর মােহরানার মালিকানা ও স্বামী এবং স্বামীর সম্পত্তিতে তাকে অংশীদার বানানাে হয়েছে। বিয়ের পর মােহরানার মাধ্যমে নারী বিরাট বিত্ত বৈভবের মালিক হওয়ার যে সুযােগ পায়, তা কোন পুরুষ পায় না।



 


Please Select Embedded Mode For Blogger Comments

নবীনতর পূর্বতন